বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়

আমাদের দেশে বাচ্চাদের খুব সাধারণ একটি সমস্যা হলো এলার্জি। যেকোনো বয়সেরই যেকারো এলার্জি হতে পারে। এলার্জির উপসর্গ অনেক ভাবেই দেখা যায়। সাধারণত ত্বকে বা স্কীনে অনেক ধরনের ফুসকুড়ি, চুলকানি থেকে এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়। তবে এলার্জি শুধু ত্বক বা স্কীনে সীমাবদ্ধ নয়। হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট—এগুলোও কিন্তু এলার্জির প্রকাশ। এ ছাড়া অনেক সময় নানা ধরনের খাবার খাওয়ার ফলে পেটের সমস্যা হয় এইগুলোও খাবার থেকে হওয়া এলার্জির বহিঃপ্রকাশ। যাদের এলার্জি থাকে, ছোটবেলা থেকেই নানান ভাবে তাদের উপসর্গ দেখা দেয়। ছোট শিশু বা সদ্যঃপ্রসূত শিশুদের গরম কাপড় থেকেও ত্বকে এলার্জি দেখা দিতে পারে কয়েকদিন পরপরই বাচ্চাদের ত্বকে চুলকানি, লাল হয়ে যাওয়া, ফুসকুড়ি, হাঁচি, কাশিজনিত সমস্যা দেখা দিলে বুঝতে হবে বাচ্চাটির এলার্জি জনিত সমস্যার দেখা দিয়েছে। অনেক বাচ্চার ধুলাবালু, পুরোনো কাপড়, বইয়ের সংস্পর্শে এলে এলার্জি দেখা দেয়।

বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়


লার্জির প্রকারভেদ

একজিমা

হাতে, গালে, মাথায়, ত্বকে কিংবা পায়ে একজিমা দেখা দিতে পারে। সাধারণত এই সমস্যা গুলোকে প্রদাহজনিত রোগ বলে। বাচ্চাদের র‍্যাশ বা দানা, ফুসকুড়ি, চুলকানি হতে পারে।

আর্টিক্যারিয়া

নানা ধরনের খাবার খাওয়া বা ধুলোবালি থেকে  আর্টিক্যারিয়া দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে বাচ্চাদের শরীরে  লাল লাল চাকা দেখা যায়। প্রচণ্ড চুলকানি হয়ে থাকে। কিছু বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে।

মিলিয়ারিয়া

অধিক গরমের কারণে বাচ্চাদের র‍্যাশ হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এলার্জি বংশানুক্রমিকভাবে হয়ে থাকে। কিছু খাবার আছে যেমন চিংড়ি মাছ, বেগুন, গরুর মাংস ইত্যাদিতে এলার্জি হয়ে থাকে। তবে মনে রাখতে হবে এসব খাবার ছাড়া অন্য খাবারেও এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটা একেক জনের জন্য একেক রকম হয়ে থাকে। অনেক বাচ্চাদের ধুলাবালুতে এলার্জি হয়, বিশেষ করে, আসবাবের নিচে পুরোনো ধুলা বা আলমারি থেকে বের করা কাপড় থেকে এলার্জি হয়ে থাকে।

বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়

বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় হিসেবে কাঁচা শসাবাটা ব্যবহার করতে পারেন। কাঁচা শসা বেটে বা পেস্ট করে লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। দিনে ২–৩বার এমন করুন।

নারকেল তেলের সঙ্গে চায়ের তেল (টি ট্রি অয়েল) একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। এই ২টি তেলের মিশ্রণ ত্বকে লাগিয়ে রেখে ২০–৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরার নির্যাসের অনেক উপকারিতার মধ্যে ফুসকুড়ির ঘরোয়া উপায়ও খুব কার্যকর। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান। ফলে অ্যালোভেরার রস লাগালে হিট র‍্যাশ কমে যায়।
তেল বা অন্য কোনো ক্রিম ব্যবহার করবেন না। ভালো মানের ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করুন। ঘাড়, বুক, পিঠ, পেট, বগল প্রভৃতি ঢেকে থাকা স্থানে ভালো করে পাউডার ব্যবহার করলে আপনার বাচ্চা স্বস্তি পাবে।

বাচ্চাদের এলার্জি দূর করতে মেনে চলুন

বাচ্চাদেরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। প্রতিদিন নিয়ম করে গোসল করাবেন। অবশ্যই হালকা সাবান ব্যবহার করবেন। গোসল শেষে পাতলা তোয়ালে বা সুতি কাপড় দিয়ে বাচ্চাদের শরীর মুছে দেবেন।
বেশি গরম বা রোদে রাখবেন না। বাচ্চাদের শরীর যত কম ঘামবে, ততই ভালো।
বাচ্চাদের আঁটসাঁট কাপড় পরাবেন না। ঢিলেঢালা কাপড় পরান, যেন সহজেই বাচ্চাদের শরীরে বাতাস ঢুকতে পারে ও তাপ বের হয়ে যেতে পারে।
যেসব জিনিসে এলার্জি রয়েছে, তা পরিহার করতে হবে। যেসব খাবারের কারণে এলার্জি হতে পারে, তা না খাওয়া। ধুলোবালি থেকে দূরে থাকা। পোষা প্রাণী বাসায় না রাখাই ভালো। এলার্জি বেড়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে

Post a Comment

Previous Post Next Post

যোগাযোগ ফর্ম